হাওজা নিউজ বাংলা রিপোর্ট অনুযায়ী, পর্ব ২- আহলে বাইতের পরিচয় তুলে ধরার জন্য এখানে একটি বিখ্যাত হাদীস যা হাদীসুল কেছা বা চাদরের হাদীস নামে পরিচিত- তা তুলে ধরছি।
হাদীসঃ হযরত জবির ইবনে আব্দুল্লাহ্ আনসারী (রাঃ) নবী কন্যা হযরত ফাতিমা জাহরা (আঃ)- এর নিকট থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ একদিন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) আমার বাড়ীতে এসে আমার সাথে দেখা করে বললেন, "মা ফাতিমা! তোমার উপর শান্তি বর্ষিত হোক"।
আমি জবাবে বললাম "আব্বাজান! আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক"। তারপর তিনি বললেন, " আমি আমার শরীরে কিছুটা দুর্বলতা অনুভব করছি"। আমি বললাম, এ দুর্বলতা থেকে আল্লাহ্ আপনাকে রক্ষা করুন"। তখন তিনি বললেন, " ফাতিমা, আমার জন্য ইয়েমেনী আবা(ঢিলা জুব্বা বিশেষ) নিয়ে এসো এবং আমার গায়ে জড়িয়ে দাও"।
আমি ইয়েমেনী আবাটি নিয়ে এলাম এবং আব্বাজানকে সেটা দিয়ে ঢেকে দিলাম। আমি তখন লক্ষ্য করলাম তাঁর চেহারা মোবারক পূর্ণিমা চাঁদের মতই জ্বল জ্বল করছে। কিছুক্ষন পর আমার প্রিয় পুত্র হাসান আসল এবং বলল, "আম্মাজান! আপনা উপর আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক"।
আমি বললাম, " হে প্রিয় পুত্র, নয়নের মনি, কলিজার টুকরো আমার! তোমার উপরও আল্লাহর শান্তি বর্ষিত হোক"। সে তখন বলল, " প্রিয় আম্মাজান! আমি আপনার নিকট এমন পবিত্র খুশবু অনুভব করছি- যা আমার নানাজান রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর খুশবু বলেই মনে হচ্ছে"। আমি বললাম, "হ্যাঁ, তোমার নানাজান এই আবার মধ্যে রয়েছেন"।
অতঃপর হসান উক্ত আবার দিকে এগিয়ে গেল এবং বলল, " হে প্রিয় নানাজান! হে আল্লাহর রাসুল! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমাকে আবার ভেতরে আসার অনুমতি দেবেন দেবেন কি?" তিনি(আব্বাজান) বললেন, " হে আমার প্রিয় সন্তান, আমার কাউসারের মালিক, তোমার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক। হ্যাঁ, তোমাকে অনুমতি দিলাম।" এরপর হাসান আবার ভেতরে ঢুকে গেল।
কিছুক্ষন পরেই আমার আদরের দুলাল হুসাইন আসল এবং বলল, " প্রিয় আম্মাজান! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক"। জবাবে বললাম, "হে প্রিয় পুত্র, নয়নের মনি, কলিজার টুকরো তোমার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক"। তখন সে আমাকে বলল, " প্রিয় আম্মাজান, আমিতে আপনার নিকট এমন খুশবু অনুভব করছি, মনে হচ্ছে তা আমার নানাজান রাসুলুল্লাহরই খুশবু"।
আমি বললাম, "হ্যাঁ, তোমার প্রিয় নানাজান আর বড় ভাই হাসান ঐ আবার ভিতরেই আছেন।" অতঃপর হুসাইন আবার কাছে গেল এবং বলল, "হে প্রিয় নানাজান! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক; হে আল্লাহর মনেনিত রাসুল! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হেক। আপনাদের সাথে এ আবার মধ্যে আসার জন্য আমাকে অনুমতি দেবেন কি"? তিনি বললেন, " হে আমার প্রিয় সন্তান! আমার উম্মতের শাফায়াতকারী! তোমার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক। হ্যাঁ, তোমাকে আসার জন্য অনুমতি দিলাম।" তখন হুসাইনও তাদের উভয়ের সান্নিধ্যে আবার মধ্যে ঢুকে পড়ল।
অতঃপর আবুল হাসান আলী ইবনে আবি তালিব এলেন এবং বললেন, " হে নবীর প্রিয় কন্যা! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক"। আমি বললাম, " হে আবুল হাসান! আমিরুল মুমিনিন! আপনার উপরও শান্তি বর্ষিত হোক"। তখন তিনি বললেন, হে ফাতিমা, আমি আপনার নিকটে এমন খুশবু অনুভব করছি মনে হচ্ছে তা আমার চাচাতো ভাই রাসুলুল্লাহ্(সাঃ)- এরই খুশবু।"
আমি বললাম, "হ্যাঁ, তিনি আপনার দুই পুত্রের সাথে এই আবার মধ্যে অবস্থান করছেন"। অতঃপর হযরত আলী (আঃ) আবার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং বললেন, " হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হেক। এ আবার ভেতরে আপনাদের সাথে মিলিত হওয়ার জন্য আমাকে অনুমতি দেবেন কি?"…চলবে…
নিবেদক- মোহাম্মদ হোসাইন, বাংলাদেশ।